গোত্রের বৈশিষ্ট্য
প্রারম্ভিক আলোচনা:
এ অধ্যায়ে অনেক কিছুই সোজা কথা মুখস্ত করতে হবে। সাধারণত খুব বেশি প্রশ্ন আসে না, আসলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু থেকেই আসে। আন্ডারলাইন করাগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায় সারবস্তু:
১. পুষ্পবিন্যাস বা পুষ্পমঞ্জরী সংক্রান্ত:
(এখানে কিছু উদাহরণ আছে, তা থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা কম)
· রেসিম = সরিষা
· স্পাইক = রজনীগন্ধা
· স্প্যাডিক্স = নারিকেল, কলা
· স্পাইকলেট = ধান, গম, ঘাস
· ক্যাটকিন = মুক্তাঝুরি
· করিম্ব = কালকাসুন্দা
· আম্বেল = ধনে, গাজর
· ক্যাপিটেট = লজ্জাবতী, বাবলা
২. ফুলের চারটি স্তবক যথাক্রমে: বৃতি, দল, পুংস্তবক, স্ত্রীস্তবক।
৩. একলিঙ্গ ফুল অসম্পূর্ণ ফুল, কেননা চারটি স্তবকের মধ্যে তৃতীয়টি বা চতুর্থটি অনুপস্থিত থাকে।
৪. অমরাবিন্যাস সংক্রান্ত:
(এখানকার উদাহরণগুলো কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ)
ক. একপ্রকোষ্ঠবিশিষ্ট:
· প্রান্তীয় = মটর
· বহুপ্রান্তীয় = পেঁপে
· মূলীয় = সূর্যমুখী
· মুক্তকেন্দ্রীয় = তুঁত
খ. একাধিক প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট:
· অক্ষীয় = জবা
· গাত্রীয় = শালুক
· শীর্ষদেশীয় = লালপাতা
৫. পুষ্পমুকুল পত্রবিন্যাস বা এস্টিভেশন:
· ভালভেট = বাবলা
· টুইস্টেড = জবা
· ইম্ব্রিকেট = কৃষ্ণচূড়া, কালকাসুন্দা
· কুইনকানসিয়াল = পেয়ারা
· ভেক্সিলারী = মটর
৬. বৃতি বা calyx এর জন্য ইংরেজী বর্ণমালার K ব্যবহৃত হয়। দল বা corolla-এর জন্য C। (এটা একটু সাধারণ যুক্তির বাইরে, কারণ বৃতিকেই C দিয়ে প্রকাশ করার কথা, যেহেতু সেটি আগে, কিন্তু যে কারণেই হোক, বৃতিকে K দ্বারা প্রকাশ করা হয়, আর দলকে C দ্বারা)। পুংস্তবকের জন্য A এবং স্ত্রীস্তবকের জন্য G।
একবীজপত্রী উদ্ভিদের গোত্র:
৭. Liliaceae গোত্র:
· এদের ফুল ট্রাইমেরাস (তিন বা তিনের গুণিতক)
· অমরাবিন্যাস অক্ষীয়
· এস্টিভেশন ইমব্রিকেট
উদাহরণ: পিঁয়াজ, রসুন, ঘৃতকুমারী, শতমূলী, উলটচণ্ডাল, কুমারীলতা
দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের গোত্র:
৮. Cruciferae গোত্র:
· ফুল টেট্রাডিনেমাস (টেট্রা=চার)। (ক্রুসিফেরের সাথে ক্রস-এর মিল আছে, আর ক্রসে চারটা হাত থাকে, এভাবে মনে রাখা যায়, আর অন্য সব দ্বিবীজপত্রী গোত্র পেন্টামেরাস)
· পুষ্পবিন্যাস প্রধানত রেসিম (সরিষা)
· ফল সিলিকুয়া জাতীয় (সিলিকুয়া বলতে মটর বা শিমের মত)
· পাতা লাইরেট (বীণার মত)
উদাহরণ: সরিষা, মূলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম
৯. Leguminoseae / Fabaceae গোত্র:
এই গোত্রের উদ্ভিদের মূলে নডিউল থাকে, যেখানে ব্যাকটেরিয়া নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে।
এই গোত্রকে তিনটি উপগোত্রে বিভক্ত করা হয়েছে।
ক. Mimosoideae
খ. Ceasalpiniodeae
গ. Papilionoideae
নিচে তুলনামূলক কিছু পার্থক্য:
বৈশিষ্ট্য | Mimosoideae | Ceasalpiniodeae | Papilionoideae |
১. দলমণ্ডলের এস্টিভেশন | ভালভেট | ইমব্রিকেট | ভেক্সিলারী |
২. বিশেষ বৈশিষ্ট্য | পুংদণ্ডগুলো পাঁপড়ি থেকে অনেক বাইরে বেরিয়ে থাকে। | বিজোড় পাঁপড়ি সবচেয়ে ক্ষুদ্র ও সম্পূর্ণভাবে ভেতরে অবস্থান করে। | ফুল প্রজাপতিসম।
বিজোড় পাঁপড়ি বৃহত্তম ও সম্পূর্ণরূপে বাইরে অবস্থিত। |
৩. পুংকেশরের সংখ্যা | ৪ টা থেকে অসংখ্য | ১০টি বা এর চেয়ে কম | ১০ টি (একগুচ্ছ বা দ্বিগুচ্ছ)
[(৯)+(১)] |
৪. পুষ্পমঞ্জরী | ক্যাপিটেট | রেসিম, করিম্ব, স্পাইক | রেসিম অথবা একক |
৫. ফল | পড্ / লোমেন্টাম / লিগিউম | লিগিউম | লিগিউম / পড |
৬. উদাহরণ: | লজ্জাবতী | কৃষ্ণচূড়া | অতসী |
১০. Malvaceae গোত্র:
· পরাগধানী একপ্রকোষ্ঠী ও বৃক্কাকার
· পরাগরেণূ বৃহৎ ও কণ্টকিত
· অমরাবিন্যাস অক্ষীয়
· ফল ক্যাপসুল, বেরী, রাইজোকার্প
উদাহরণ: জবা, ঢেঁড়স, কার্পাস ইত্যাদি।
১১. Solanaceae গোত্র:
· ফুল পেন্টামেরাস
· অমরাবিন্যাস অক্ষীয়
· ফল সাধারণত বেরী, কখনও ক্যাপসুল।
উদাহরণ: ধুতুরা, গোলআলু, টোম্যাটো, মরিচ, বেগুন, তামাক ইত্যাদি।
১২. ফুলের বর্ণকণিকা:
· সরিষা ফুলে বিটাজেন্থিন থাকে, তাই ফুলটিকে হলুদ দেখায়।
· জবা ফুলে অ্যান্থোসায়ানিন থাকে, তাই ফুলটিকে লাল দেখায়।
(কনফিউশন এভাবে দূর করা যেতে পারে.. ল এর পরে হ আসে, তেমনি A এর পরে B। তাই লাল=A, হলুদ=B)
১৩. কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফুলের পুষ্পসংকেত:
জবা = MF, EK5 K(5) C5 A(α)G(5) (A এর নিচে α দেখলেই বুঝতে হবে এটি জবা ফুল)
ধুতুরা = MF, Å K(5) C(5) A5G(2) (এমন ৫ টি করে থাকলে ধুতুরা চেনা যেতে পারে)
এছাড়া একবীজপত্রী তে তিন-এর গুণিতক, ক্রুসিফেরি ৪ এর গুণিতক দেখা যাবে।
উদ্ভিদবিজ্ঞান সকল অধ্যায় দেখতে এখানে যান
1 responses on "উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি জীববিজ্ঞান উদ্ভিদবিজ্ঞান : গোত্রের বৈশিষ্ট্য"